ডেস্ক রিপোর্টার :: সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের টার্মিনাল তৈরির কাজ পেয়েছে চীনা কোম্পানি। তবে এতে ভারত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে। ভারত ইঙ্গিত করছে, বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। হংকং ভিত্তিক পত্রিকা এশিয়া টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এমনটাই প্রকাশ পেয়েছে।
গতকাল প্রকাশিত এশিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ, ‘সিলেটের এয়ারপোর্ট টার্মিনাল তৈরির কাজ চীনা কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে। এই খবরে ভারতের মিডিয়া এখন সরগরম। তারা ইঙ্গিত করছে, বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। অপরদিকে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চার মাস চেষ্টা করেও সাক্ষাৎ পাননি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী এম এ মোমেন ‘দ্যা হিন্দু’কে রোববার বলেন, ‘পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফোন করলে বাংলাদেশের কি করার আছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তো একই বিশ্বে বাস করে। আবার একদিন পরে অপর একটি ভারতের মিডিয়াকে বলেছেন, তিনি আশা করেন যে, ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে। শেখ হাসিনা-ইমরান খানের আলাপ ছিল সৌজন্যমূলক। কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। শেখ হাসিনা এনিয়ে কথা বলতে চাননি।’
এশিয়া টাইমসে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিম ভিরতুল লিখেছেন, ‘বিজেপি বাংলাদেশের মনোভাব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে । অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তার কোনো শিক্ষা হয়নি। আর সেকারণে দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের কাছে তার ইজ্জত ক্ষুণ্ন হয়েছে ।
এশিয়া টাইমস পত্রিকাটির মতে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলীর চতর্থবারের মতো মর্যাদাহানি ঘটেছে। দি হিন্দুকে জনাব মোমেন অবশ্য বলেছেন, এটা সঠিক নয়। কারণ করোনার কারণেই প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ দিচ্ছেন না। এভাবে দেখাটা অতিরঞ্জিত। এশিয়া টাইমস এর ভাষায় দি হিন্দু যে রিপোর্ট করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, চীন এবং পাকিস্তান উভয়কে যখন ভারত তার প্রতিপক্ষ মনে করে, তখন এ দুটি দেশের দিকে বাংলাদেশ সাম্প্রতিককালে ঝুঁকে পড়েছে। আর এই ঝুঁকে পড়ার নিদর্শন হচ্ছে সিলেট এয়াপোর্টে চীনা কোম্পানির কাজ পাওয়া।’
উল্লেখ্য, ২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হবে। গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন, একটি কার্গো ভবন, আধুনিক এটিসি টাওয়ার, ট্যাক্সিওয়ে ও অ্যাপ্রোন এবং আধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপন সম্ভব হবে। এর ফলে বিমানবন্দরের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৬ লাখ থেকে ২০ লাখে উন্নীত হবে।
চুক্তিপত্রে বেবিচকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এবং কার্যাদেশ প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বেইজিং আরবান কন্সট্রাকশন গ্রুপের পক্ষে বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড হ্যারল্ড হুয়াং। প্রকল্পের কাজ শেষ হতে দুই বছর ৯ মাস সময় লাগবে।
Leave a Reply